শুক্রবার, মে ৩, ২০২৪

সফল তরমুজ চাষি

Must read

টুডে বাংলাদেশ : পাইকগাছা: কয়েক বছর আগেও লবণের লাগামহীন আগ্রাসনের কারণে সবুজ প্রকৃতি ফিরিয়ে আনা ছিল কৃষকদের কাছে স্বপ্ন। আজ মাঠজুড়ে তরমুজ লাগানো হয়েছে। বিস্তীর্ণ প্রান্তর জুড়ে যতদূর চোখ যায় সবুজের সমারোহ। কাঙ্খিত সাফল্যের আশায় নিজ নিজ মাঠে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন কৃষকরা। সুন্দরবনের উপকূলীয় লোনা পানির জনপদে তরমুজ গাছের প্রতিটি পাতায় পোড়া কৃষকদের সোনালী স্বপ্ন দুলছে। তারা দিনের বেশিরভাগ সময় বসন্তের রোদে ঘাম ঝরিয়ে মাঠের পরিচর্যা করে। যেন সোনালী ভবিষ্যতের পথে ভিন্ন গতিতে এগিয়ে চলেছে তারা। ভালো উৎপাদন ও দাম পাওয়ায় খুলনার পাইকগাছায় প্রতিবছরই বাড়ছে তরমুজের আবাদ। ১৪০০ হেক্টর জমিতে তরমুজ চাষ হচ্ছে, যা গতবারের চেয়ে প্রায় ৩০০ হেক্টর বেশি। অনুকূল আবহাওয়ায় উপজেলায় তরমুজের বাম্পার ফলন হবে বলে আশা করছেন কৃষক ও কৃষি বিভাগ। উপজেলার দেলুটি, গাড়িখালীতে বাণিজ্যিক ভিত্তির পাশাপাশি তরমুজ চাষে নতুন বিপ্লবের সাক্ষী হতে মাঠে নেমেছে পরীক্ষামূলক ও অত্যাধুনিক চাষিরা।
উপজেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে দুই সপ্তাহ আগে থেকেই তরমুজের বীজ বপন শুরু করেছেন কৃষকরা। আশা করা হচ্ছে চলতি সপ্তাহেই কাঁখিত জমিতে চাষাবাদ শেষ হবে। যারা প্রথমে বীজ বপন করেছিল তাদের ৫/৬টি পাতা বের হয়েছে। অনেকেই বেরিয়ে আসার পথে। মাত্র দুই বছরের ব্যবধানে এ বছর দ্বিগুণ জমিতে তরমুজের আবাদ হয়েছে। দুই বছর আগে উপজেলায় ৫০০ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ হয়েছিল, গতবার চাষ হয়েছিল ১১০০ হেক্টর। আর এবার আবাদ হয়েছে প্রায় ১৪০০ হেক্টর জমিতে। ধারণা করা হচ্ছে প্রতি বছর উপজেলায় তরমুজের চাষ বাড়বে। সূত্র আরো জানায়, মাঠ চাষ ও বাজার সম্প্রসারণের কারণে এবার ব্যাপক হারে ড্রাগন, সুইট ড্রাগন, পাকিজা, বিগ ফ্যামিলি, ব্ল্যাক মানিকসহ বিভিন্ন জাতের তরমুজ চাষ হয়েছে। অনুকূল আবহাওয়ায় বাম্পার ফলনের আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
সুন্দরবন উপকূল ঘেঁষে খুলনার পাইকগাছা উপজেলার অধিকাংশ এলাকায় লোনা পানির চিংড়ি চাষ শুরু হয়েছে। অধিকাংশ জমি একক ফসল চাষের উপযোগী ছিল। কয়েক বছর আগেও সারা মরুভূমিতে নোনা জলের চিংড়ির খামার ছিল। নোনা পানির গন্ধে জেগে ওঠে শহরের মানুষ। ক্রমাগত লোকসানের মুখে লোনা পানির পর্যায়ক্রমে তিল ও মুগ চাষ শুরু হয়। তবে উপজেলার গাড়িখালী ও দেলুটি এলাকার এসব জমি এক ফসলের পর বছরের বাকি সময় পতিত ছিল। গত কয়েক বছরের অতিবৃষ্টিতে লোকসানের মুখে কৃষি বিভাগের পরামর্শে কৃষকরা তিল চাষ পরিত্যাগ করে তরমুজ চাষে ঝুঁকেছেন। উৎপাদনের পাশাপাশি ভালো দাম পাওয়ায় ইতোমধ্যে তরমুজ চাষ ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে। তবে কৃষকদের পাশাপাশি স্থানীয় কৃষি বিভাগ অক্লান্ত পরিশ্রম করেছে দক্ষিণের লোনা জলাবদ্ধ কৃষিকে ফিরিয়ে আনতে। তারা প্রতিনিয়ত কঠোর পর্যবেক্ষণ ও পরামর্শ দিয়ে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করছেন। কৃষকরাও স্বীকার করেন আজকের আশা সাফল্যের জন্ম। অব্যাহত সাফল্যে শুধু দেলুটি ও গড়-ইখালী নয়, রসালো তরমুজ স্বপ্ন বুনন উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে বিস্তৃত হয়েছে। কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ বছর দেলুটিতে ১ হাজার হেক্টর ও গারিখালীতে চারশত হেক্টর। প্রতি বিঘা 10,000 থেকে 12,000 টাকা এবং হেক্টর প্রতি 10,000 থেকে 20,000 টাকা। সঠিকভাবে চাষ করলে প্রতি হেক্টরে ৪০ থেকে ৪৫ মেট্রিক টন উৎপাদন হবে বলে আশা করছেন তারা। যা বিক্রি হতে পারে প্রায় দুই লাখ টাকায়। সে অনুযায়ী উপজেলাজুড়ে প্রায় ২৮ কোটি টাকার তরমুজ বিক্রি হবে বলে আশা করছেন কৃষকরা। দেলুটি ইউনিয়নের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা উত্তম কুমার কুন্ডু জানান, দেলুটি ইউনিয়নের কালিনগরের পরিতোষ ছাড়াও সেভনের নাগের হিরন্ময় ও গোপীপাগলা গ্রামের প্রহ্লাদ, ফুলবাড়িয়ার সত্যেন্দ্র নাথ সরকার, ভিগরদানার শিব প্রসাদ সরকার, গোপী পাগলার অসীম, রবিউল আলম। তেলিখালীর সুফল মল্লিক আবার আবাদ করছেন। , ইয়াইদখালীর লোচন সরকার। এছাড়া গাড়িখালী ইউনিয়নের আমিরপুরের মিল্টন, গৌতম সানা, বাইন বাড়িয়ার বীরেন্দ্রনাথ, গোবিন্দ, উত্তম, শান্তর শফিকুল ইসলাম, দিলীপ ঢালী ও কুমখালীর বাসুদেব কবিরাজ, হোগলার চক গ্রামের মলয়সহ অন্যরা জানান, বিপুল পরিমাণ মজুদ হয়েছে। পাইকগাছায় তরমুজ চাষ, যা খুলনার তরমুজ চাষের জন্য বিখ্যাত। এ এলাকার তরমুজের স্বাদ ও আকৃতির পার্থক্যের কারণে বাজারে এর চাহিদা বেশি। করোনার প্রথম বছরে সরবরাহ বা বাজারজাত করতে না পারায় আশানুরূপ দাম পাননি কৃষক। তবে দ্বিতীয় বছরে পরিস্থিতি একটু ভালো হলেও এবারের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারবেন বলে আশা করছেন তারা। এদিকে তারা আরো জানান, কৃষকরা দুই থেকে দশ/বারো বিঘা জমিতে তরমুজের বীজ বপন করছেন। প্রত্যেকের ক্ষেতের ফসল

- Advertisement -

More articles

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

- Advertisement -

Latest article